Click Below

Breaking

Know more

Search

শুক্রবার, ৬ জানুয়ারী, ২০২৩

পলিস বা নগর রাষ্ট্র কি? পলিসের বৈশিষ্ট্য লেখ? || CLASS 11 HISTORY

 



একাদশ শ্রেণির ইতিহাস 


গুরুত্বপূর্ণ বড় প্রশ্ন** 



পলিস বা নগর রাষ্ট্র কি? পলিসের বৈশিষ্ট্য লেখ? 

উঃ পলিস বলতে নির্দিষ্ট ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ভূখণ্ডে ঐক্যবদ্ধভাবে কর্মরত একটি জনগোষ্ঠীকে বোঝায়। গ্রিসের ক্ষুদ্র রাষ্ট্রগুলির নাগরিকরা যাবতীয় কাজকর্মে প্রত্যক্ষভাবে অংশগ্রহণ করত, এই ক্ষুদ্র রাষ্ট্রগুলিকে গ্রিক ভাষায় 'পলিস' বলা হত। প্রাচীন গ্রীক পলিস গুলি বাংলায় 'নগর রাষ্ট্র' নামে পরিচিত। এই প্রসঙ্গে প্রাচীন গ্রিসের ইতিহাসবিদ থুকিডিডিস বলেছেন যে, "Men are the police." 


পলিসের বৈশিষ্ট্য:- 


পলিস বা নগর রাষ্ট্রগুলি আধুনিক রাষ্ট্র থেকে বিভিন্ন দিক দিয়ে আলাদা ছিল। এই প্রেক্ষাপটে প্রাচীন গ্রিক পলিশগুলি নির্দিষ্ট কিছু বৈশিষ্ট্য লক্ষ্য করা যায়। যথা- 

১) ক্ষুদ্রায়তন:- গ্রিক পলিস বা নগর রাষ্ট্রগুলি আকারে ছোট এবং আয়তনে আধুনিক রাষ্ট্রের তুলনায় খুবই ক্ষুদ্র হত। অবশ্য প্রাচীন গ্রিক দার্শনিক অ্যারিস্টোটল ও প্লেটো পলিস গুলির ক্ষুদ্র আয়তনকেই সমর্থন করেছেন। বস্তুত গ্রিক পলিশগুলির আয়তন এমন ক্ষুদ্র যে, পলিসের প্রতিটি নাগরিক রাষ্ট্রের শাসনকার্য প্রত্যক্ষভাবে অংশগ্রহণ করতে পারত।


২) স্বল্প জনসংখ্যা:- পলিসের আয়তন খুব ছোট হওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই প্রতিটি পলিসে জনসংখ্যা খুব কম হতো। এথেন্সের মতো কিছুটা বড় ও গুরুত্বপূর্ণ পলিসে জনসংখ্যা কিছুটা বেশি থাকলেও অধিকাংশ পলিশের জনসংখ্যা ছিল ৫ হাজার বা তার চেয়েও কম। দার্শনিক অ্যারিস্টোটল খুব বেশি জনসংখ্যা নিয়ে পলিশের গঠনকে সমর্থন করেননি। তিনি তার politics গ্রন্থে বলেছেন যে, ১০ জন নাগরিক নিয়ে গঠিত পলিশ যেমন স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে পারে না, তেমনি এক লক্ষ নাগরিক নিয়ে গঠিত পলিশও সুদক্ষ শাসন পরিচালনা করতে পারবে না। ফিনলে বলেছেন যে, এই সময় এথেন্স প্রায় ২ লক্ষ ৫০ হাজার থেকে ২ লক্ষ ৭৫ হাজার জনসংখ্যা ছিল। স্পার্টার আয়তন অন্য পলিস গুলির তুলনায় কিছুটা বড় হলেও এখানকার জনসংখ্যা যথারীতি কম ছিল।


৩) শাসন কাঠামো:- প্রথমদিকে পলিস গুলি বংশানুক্রমিক রাজতন্ত্রের অধীনে শাসিত হলেও পরবর্তীকালে বেশির ভাগ পলিসেই রাজতন্ত্রের অবলুপ্তি ঘটে। গ্রিসের পলিস গুলিতে গণতান্ত্রিক, অভিজাতান্ত্রিক, স্বৈরতান্ত্রিক প্রভৃতি বিভিন্ন ধরনের শাসন কাঠামো চালু হয়। এথেন্স ছিল গণতান্ত্রিক এবং স্পার্টা ছিল অভিজাতান্ত্রিক।

গ্রিসের পলিস গুলির শাসন কাঠামোর রাজনৈতিক সংগঠনের প্রধান তিনটি অংশ ছিল- সমিতি, পরিষদ ও ম্যাজিস্ট্রেট। পলিস গুলির সাংবিধানিক নীতিতে ক্ষমতা বিভাজন নীতির কোনো অস্তিত্ব ছিল না। সমিতি ও পরিষদ একাধারে আইন প্রণয়ন, নীতি নির্ধারণ এবং কখনো কখনো বিচার বিভাগের কাজ সম্পাদন করত। ম্যাজিস্ট্রেটের প্রধান দায়িত্ব ছিল বিচারক হিসেবে কাজ করা।


৪) নাগরিক ও অনগরিক:- প্রতিটি গ্ৰিক পলিসে বসবাসকারী জনগণ পধানত দুটি ভাগে বিভক্ত ছিল। যথা - নাগরিক ও অনাগরিক। সাধারণত জন্মসূত্রের নাগরিক না হলে পলিসে নাগরিক অধিকার পাওয়া যেত না। নাগরিকরা দেশের বিভিন্ন নাগরিক অধিকার ও প্রত্যক্ষ সুযোগ সুবিধা ভোগ করতো। অন্যদিকে অনাগরিকরা তিন ভাগে বিভক্ত ছিল। যথা - বিদেশী ক্রীতদাস ও মহিলা।

বিদেশীরা ও মহিলারা নাগরিক হিসেবে গণ্য হতো না। এথেন্সে বিদেশীরা মেটিক নামে পরিচিত ছিল। ক্রীতদাসরা এথেন্সে থিটিস নামে এবং স্পার্টায় হেলট নামে পরিচিত ছিল। এই ক্রীতদাসরাও অনাগরিকের শ্রেণীতেই পড়তো।


৫) জনগণের প্রত্যক্ষ শাসন:- পলিস গুলির শাসন পরিচালনায় নাগরিকরা প্রত্যক্ষভাবে অংশগ্রহণ করতে পারত। ক্ষুদ্র পালিশ গুলির নাগরিকরা প্রত্যেকেই প্রত্যেককে চিনতে এবং সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে কোন শাসন বিষয়ক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করত।


৬) ধর্মীয় বিশেষত্ব:- গ্রিক পলিশ গুলিতে বহু দেবতার আরাধনার প্রচলন ছিল। জিউস, প্যাসিডন, অ্যাপোলো, এথেনা, হেরা প্রমুখ ছিলেন পলিশের প্রধান দেবদেবী। বিভিন্ন দেবতা বিভিন্ন ক্ষেত্রকে নিয়ন্ত্রণ করতেন। যেমন - জিউস ছিল আকাশের দেবতা, পসিডন ছিল সাগর ও ভূমিকম্পের দেবতা। জিউস ছিলেন দেবতাদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ। এছাড়া পলিশ ভেদে বিভিন্ন দেবতার গুরুত্ব তারতম ছিল। যেমন - এথেন্সে দেবী এথেনার অত্যাধিক গুরুত্ব থাকলেও স্পার্টায় তা ছিল না।


আরো পড়ুন:-একাদশ শ্রেণি রাষ্ট্রবিজ্ঞান || প্রথম অধ্যায় বড় প্রশ্নের সাজেশন - 2023 CLICK HERE


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Click Here